ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতকে বাংলাদেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি উল্লেখ করে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, নীতি সহায়তার অভাবে বাংলাদেশের মোট দেশজ উপৎপাদন বা জিডিপিতে কাঙ্খিত অবদান রাখতে পারছেনা এই খাত। তাই এসএমই উদ্যোক্তাদের ডেটাবেজ তৈরিসহ তাদের উন্নয়নে এসএমই ফাউন্ডেশনকে সহায়তা দেবে সরকার। ০২ জুলাই ২০২৫ এসএমই ফাউন্ডেশন-ইআরএফ মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০২৫ বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন অর্থ উপদেষ্টা। এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন মো. মুসফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম-ইআরএফ সভাপতি দৌলত আকতার মালা। শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন এসএমই ফাউন্ডেশনের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এসএমই উদ্যোক্তাদের সবচেয়ে বড় সংকট অর্থায়ন। তাই এসএমই উদ্যোক্তাদের মাঝে ঋণ বিতরণ বাড়াতে ব্যাংকারদের ইতিবাচক মানসিকতা প্রয়োজন। এসএমই ফাউন্ডেশনের ক্রেডিট হোলসেলিং কর্মসূচির আওতায় এসএমই উদ্যোক্তাদের মাঝে বিতরণকৃত ঋণের পরিশোধের প্রায় শতভাগ হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, প্রয়োজনে এসএমই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ঋণ বিতরণের পরিমাণ বাড়ানো যেতে পারে। এছাড়া আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে আর্থিক খাতের গুরুত্বপূর্ণ কিছু সংস্কার কাজ শেষ করার ঘোষণা দেন অর্থ উপদেষ্টা।
এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন মো. মুসফিকুর রহমান বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে এসএমই ফাউন্ডেশন প্রায় ২০ লক্ষাধিক উদ্যোক্তাকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সেবা প্রদান করেছে, যাদের মধ্যে আড়াই লক্ষাধিক সরাসরি সুবিধাভোগী উদ্যোক্তা এবং ৫৫% নারী-উদ্যোক্তা। এসএমই ক্লাস্টার, অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত খাত, সারাদেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা এবং নারী-উদ্যোক্তাদের স্বল্প সুদে সহজ শর্তে এসএমই ফাউন্ডেশন ২০০৯ সালে ক্রেডিট হোলসেলিং কর্মসূচির মাধ্যমে প্রায় ১ হাজার ১০ কোটি টাকা প্রায় ১১ হাজার উদ্যোক্তার মাঝে বিতরণ করেছে যাদের অন্তত ২৫% নারী-উদ্যোক্তা। তবে এই সংখ্যা দেশের এক কোটি ১৮ লাখ উদ্যোক্তার তুলনায় খুবই নগন্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফাউন্ডেশনের আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে উদ্যোক্তাদের সব চাহিদা শতভাগ পুরণ করা সম্ভব হচ্ছেনা। এক্ষেত্রে এসএমই ফাউন্ডেশনের সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়ে সরকারের সদয় মনোযোগ ও সহায়তা দরকার।
এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে এসএমই ফাউন্ডেশন সীমিত সামর্থ্য দিয়ে নতুন উদ্যোক্তা ও বিদ্যমান উদ্যোক্তাদের দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করছে। তবে আরো বেশি উদ্যোক্তাদের সেবারা আওতায় আনতে এসএমই ফাউন্ডেশনের জন্য স্থায়ী অবকাঠামো গড়ে তোলা প্রয়োজন।
প্রথমবারের মতো এসএমই ফাউন্ডেশন-ইআরএফ মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০২৫ পুরস্কার পেয়েছেন দেশের পত্রিকা, টেলিভিশন ও অনলাইন পত্রিকার ২১জন অর্থনৈতিক প্রতিবেদক।